Header Ads Widget

হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ)

 


হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.) ১২২৭ হিজরী সনে মুসলিম সভ্যতার লীলাভূমি রাশিয়ার তাঁতার প্রদেশের হাজরা জিলার কাসঘর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।

তাঁর দাদা ছিলেন বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (রহ.) এবং তাঁর পিতার নাম হযরত সায়্যিদ আযাল্লাহ শাহ (রহ.)। তিনি হযরত শাহ মখদুম রুপশ (রহ.) এর বড় ভাই এবং সফর সঙ্গী ছিলেন।

ইতিহাসের কলংকজনক অধ্যায়ে ১২৫৮ ‌সালে মোঙ্গলিয়ার শাসক হালাকু খাঁন ঐতিহাসিক বাগদাদ নগরী আক্রমণ করে আব্বাসীয় খেলাফতের পতন ঘটান । এ সময়ে বাগদাদ নগরীতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে ।

হালাকু খান বাগদাদ আক্রমণ করলে বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধরগণ বাগদাদ থেকে কাবুল, কান্দাহার, পারস্য ও পাক ভারতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেন। হযরত শাহ্ মখদুম রুপোশ (রহঃ) ‌এর পিতা হযরত আজ্জালা শাহ্ পরিবার-পরিজন ও সঙ্গী-সাথী সহ  বাগদাদ হতে দিল্লীতে আশ্রয় গ্রহণ করেন।  তার উন্নত চরিত্র ও গুণাবলীর প্রতি মুগ্ধ হয়ে দিল্লীর সম্রাট (১২৬৬-১২৮৭ সাল)  গিয়াসউদ্দিন বলবন তার কাছে বায়েত হন।

পিতার সহচার্যে তিন পুত্র সৈয়দ মুনির উদ্দীন আহমেদ (রহঃ), হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.) ও সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান শাহ (রহ.) অধ্যাত্মিক সাধনায় সমৃদ্ধ লাভ করেন। হালাকু খানের মৃত্যুর পর হযরত শাহ আজ্জালা বাগদাদে ফিরে গেলেও তার পুত্রগণ ইসলামের সুমহান বাণী প্রচারের উদ্দেশ্যে কিছু মুরিদ-অনুচরসহ  দিল্লিতে অবস্থান করেন।

কিশোর বয়সেই মুর্শিদ কিবলা প্রিয় আব্বাজানকে হারিয়ে এতিম হয়ে যান। পিতৃহীন হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.) যত বড় হচ্ছেন দিন দিন ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তাঁর মহিয়সী মা তার পুত্রের এহেন আচরন এবং শিকারের নেশায় উন্মত্ত্ব চলাফেরায় বিচলিত হয়ে উঠেন। পরিশেষে কোন উপায় অন্ত না দেখে এক ডেগ শিরনী তৈরী করে  ফাতেহা খানী শেষে  হযরত গাউছুল আজম বড়পীর দস্তগীর সৈয়দ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদের জিলানী(রহ.) এর রওজা পাকের দিকে মুখ করে দুহাত বাড়িয়ে হযরত গাউছুল আজমের দরবারে অত্যন্ত মিনতির সূরে আহবান করলেন ওহে আল্লাহর মহান অলী আমি আমার এই কলিজার টুকরা সন্তানকে আমার মাতৃত্বের সমস্ত হক হতে মুক্ত করে আপনার পবিত্র হাতে সপে দিলাম আপনি এ অসহায় মায়ের আব্দার খানি সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করুন।

যেমন কথা তেমন কাজ দেখা গেল। হঠাৎ করে রৌদ্রাকাশে এক খন্ড মেঘের ছটা। সত্যিই এই দুয়ার পর পুত্র ধন আগের মত নেই কেমন যেন একটা গাম্ভীর্যভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.) তাঁর আম্মাজানের কাছে দুর দেশে গিয়ে দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের অনুমতি প্রার্থনা করলে মায়ের অনুমতিক্রমে ভারতের ভূপালে চলে আসেন এবং ইলমে দ্বীন অর্জন শেষে বাড়িতে ফিরে দেখলেন মমতাময়ী মা তাকে চির বিদায় জানিয়ে মাওলার দরবারে সাড়া দিয়েছেন বহু আগেই।

দুঃখে কষ্টে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে পিতামাতা হারানোর বেদনায় এবং ভাবতে থাকেন তাঁর এই পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই। হঠাৎ মায়ের সেই দুয়ার কথা মনে পড়তেই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি তাঁর দাদা হুজুর বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (রহ.) এর দরবারে যাবেন কিন্তু কি নিয়ে যাবেন একথা ভাবতেই সিদ্ধান্ত নিলেন ১২ বছর রোযা রেখে গাউছে পাকের কদমের  উপযুক্ত করে  তবেই বাগদাদ যাবেন। শুরু হল তাঁর সাধনা অতঃপর আশার প্রদীপ দেখতে পেয়ে রওনা দেন মহা প্রত্যাশিত গন্তব্যস্তল বাগদাদে। পায়ে হেঁটে চললেন কয়েক হাজার মাইল শেষ পর্যন্ত বাগদাদ থেকে ৩ মাইল দুরত্বে এক মসাফির খানায় রাত্র যাপনের জন্য আশ্রয় নিলেন এবং ইবাদতের ফাঁকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘুম আসল আর সপ্নে দেখলেন এক আজব নির্দেশ কে যেন বললেন ওহে মিরান শাহ তোমার ১২বছর রোযা সম্পন্ন হয়েছে এবার রোযা ছেড়ে আমার দিকে রওনা হও। সাথে সাথে ঘুম ভেংগে গেল মুর্শিদ কিবলা পড়লেন মহাচিন্তায় কে এই নির্দেশকারী? এটা কি আল্লাহর পক্ষ থেকে না শয়তানের পক্ষ থেকে? ভাবতে ভাবতে আবার ঘুমিয়ে পড়লেন এবং একই সপ্ন আবার দেখে চমকে উঠলেন এবং অযু করে দু’রাকাত নফল নামায পড়ে আল্লার দরবারে দোয়া করলেন হে আল্লাহ এই সপ্নের নির্দশকারী কে? এর নির্দেশকারী যদি সঠিক হয় এতে তোমার সম্মতি থাকলে আমি যেন আবার সপ্নটা দেখি। দোয়া শেষ করে মুর্শিদ কেবলা সৈয়দ মিরানশাহ তাতারী (রহ.) ইচ্ছা করেই ডান কাতে কিবলামূখী হয়ে শুয়ে পড়লেন আর চোখ লাগতেই আবার নির্দেশ ওহে মিরান শাহ শিগগির রোযা ভঙ্গ করে আমার দরবারে উপস্থিত হও।

 নির্দেশ পাওয়া মাত্রই মূর্শিদ কিবলার ঘুম ভেংগে যায় কানে আযান ভেসে আসে সাথে সাথে বিছানা ছেড়ে অযু করে ফজরের নামায শেষে অল্পকিছু আহার করে ব্যাকুল হৃদয়ে চিরকাংখিত মহান অলীর দরবারে গাউছিয়াতের দিকে রওনা হলেন।


অবশেষে হাজির হলেন বেলায়তের সম্রাট গাউছে পাকের পবিত্র মাজার শরীফে,রওজা পাকের ডান পার্শ্বে চক্ষু বন্ধ করে অতি আদবের সাথে অঝোর ধারায় কাঁদতে লাগলেন হঠাৎ অনুভব করলেন এক কাংখিত জান্নাতী পরশ যার ছোয়ায় চৌখ খুলতেই দেখতে পেলেন আকাশের চাঁদ যেন মাটিতে নেমে এসেছে স্বয়ং গাউছে পাক (রহ.) মাজার শরীফ থেকে উঠে মুর্শিদ কিবলার সামনে।  বড়পীর সৈয়দ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) হযরত সৈয়দ মিরান শাহ তাতারী (রহ.) কে স্বহস্তে বায়াত করে এযাযত দিয়ে মুলকে বাংলায় তাঁর তরিকার খেদমতের নির্দেশ দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। বলে গেলেন কোন ভয় নেয় তোমার পীর স্বয়ং আমি আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) তোমার থেকে সিলসিলা সরাসরি আমার দিকে নিছবত করবে।

 অতঃপর হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.) মোর্শেদের নির্দেশ মোতাবেক বাংলার খুজে বের হলেন। যাত্রাপথে ভারতের উত্তর প্রদেশের মুসলিম জনপদ রামপুরের শিয়া জমিদার নবাব কলবে আলীকে সুন্নী মতাদর্শে দীক্ষিত করে বায়াত করান কিছুদিন অতিবাহিত করে সেখানে এক খান্দানী সৈয়দ পরিবারে বিবাহ করেন।

নবাব কলবে আলী হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.)-কে কাছে রাখার জন্য একখন্ড জমি লিখে দিলে, তিনি বাড়ির জায়গাটুকু রেখে বাকি জায়গা ফেরত দিয়ে দেন।

নবাব নিজস্ব খরচে তার মুর্শিদ কিবলার জন্য একটি বাড়ি তৈরী করে দেন। কিছুদিন পর পরিবারকে রামপুরে রেখে হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.) আবার বাংলার পথে যাত্রা শুরু করেন।

কলকাতায় পৌছলে বর্তমান কুমিল্লার তৎকালীন দারোগা বাড়ির জনৈক ভদ্রলোক হযরত সৈয়দ শাহ মিরান (রহ.)-কে কুমিল্লায় নিয়ে আসেন কিছুদিন সেখানে সফর করে বাংলার মুসলমানদের সামাজিক অবক্ষয় দেখে বিষন্ন মনে রামপুরে ফিরে গিয়ে কিছুদিন অবস্থান করে আবার তাঁর মোর্শেদ গাউছে পাক হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) এর দরবার বাগদাদ শরীফে হাজির হয়ে আরজ করলেন হুজুর-সেখানকার মুসলমানদের যে অবস্থা,আমি তাদেরকে বায়াত দিতে সাহস পাচ্ছি না। আমি তাদের মুরিদ করে আল্লার দরবারে কি জবাব দিব তার চাইতে আপনার কদমে থাকাটাই শ্রেয়। তখন গাউছে পাক বললেন তোমার দায়িত্ব কাজ করা আর ফল দেয়ার দায়িত্ব মহান আল্লাহর। তাদের ব্যাপারে চিন্তিত হয়ো না কারন ধানের গোলায় সব ধানই পুষ্ট থাকে না। কিন্তু বিক্রির সময় অপুষ্ট ধানগুলিও পুষ্ট ধানের দামে বিক্রি হয় তদ্রুপ তোমার মুরিদ যতই নিকৃষ্ট হোক আমার মুরিদের সাথে তারা জান্নাতে যাবে। এ আশ্বাস পেয়ে মুর্শিদ কিবলা তিনি আবার বাংলায় রওনা দেন।

অপরদিকে বঙ্গের সুলতান তুঘরিল খান দিল্লির সুলতানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে, দিল্লীর সম্রাট (১২৬৬-১২৮৭ সাল) গিয়াসউদ্দিন বলবন বৃদ্ধ বয়সে বাংলার সুলতান তুঘরিল খানের বিদ্রোহ দমনের জন্যে সুদূর দিল্লি হতে বাংলার রাজধানী সোনারগাঁও এর দিকে অগ্রসর হন।

তাঁর সাথে যোগ দেন শত শত মুসলিম ধর্ম প্রচারক। এমতবস্থায় হযরত শাহ্‌ মখদুম (রহ.) এর বড় ভাই হযরত সৈয়দ আহমদ তন্নুরী ওরফে মিরান শাহ (রহ.) বড়পীর গাউসুল আযম দস্তগির হযরত আবদুল কাদের জিলানীর (রহ.) রুহানি (স্বপ্নে পাওয়া ) নির্দেশে  দিল্লী থেকে পরিবারবর্গ ,কতিপয় অনুচর ও মুরিদ সহ গিয়াসউদ্দিন বলবনের সৈন্যবাহিনীর সাথে যাত্রা শুরু করেন।

বাংলার সুলতান তুঘরিল খান ও তার পরিষদবর্গকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে  গিয়াসউদ্দিন বলবন তার পুত্র বোখরা খান কে বাংলার মসনদে বসিয়ে পুনরায় দিল্লি প্রত্যাবর্তন করেন কিন্তু ইসলাম প্রচারকগন বাংলার জমিনেই থেকে যান।

গিয়াসউদ্দিন বলবনের পুত্র বাংলার রাজধানী সোনারগাঁও এর পরিবর্তে গৌড়ে (মালদহ জেলায় অবস্থিত) স্থানান্তর করেন। ফলে রাজকীয় সৈন্যবাহিনীর বৃহৎ অংশ সোনারগাঁও হতে নৌ ও স্থলপথে গৌড়ে পৌঁছেন। সঙ্গত কারনে হযরত শাহ্‌ মখদুম (রহঃ), হযরত সৈয়দ আহমদ তন্নুরী ওরফে মিরান শাহ (রহ.) ও তাদের কাফেলা নৌপথে  গৌড়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।

গৌড় ও গৌড় নগরীর পান্ডুয়াতে ইসলাম প্রচারের একপর্যায়ে পাণ্ডুয়া হতে ভূলুয়া পরগনা তথা নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে লক্ষীপুর জেলায় ) রামগঞ্জ থানার মোনারবাগে হাজির হন ত্রয়োদশ শতকের শেষ দিকে ১২৮৭ সালে (৬৮৫ হিজরিতে)। সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের প্রতাপ বেশি ছিল, স্থানীয় হিন্দুরা তাঁর প্রতি অবজ্ঞা, হিংসা ও অত্যাচার করতে থাকায় কিছু দিনের মধ্যে স্থান ত্যাগ করে অনতি দূরে কাঞ্চনপুরে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানে স্থায়ী আস্তানা স্থাপন করেন ।

 সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান শাহ (রহ.) লক্ষীপুর জেলার কাঞ্চনপুরে এবং হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.) কাঞ্চনপুরের পাশে শ্যামপুরে খানকা স্থাপন করেন। হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.)  দু’বছর অধিক কাল শ্যামপুর এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে দ্বীন ইসলাম প্রচার করেন। পরে তিনি তাঁর বিশেষ মুরীদ ও খলিফা হযরত সৈয়দ জকি উদ্দিন শাহ হোসেনী (রহঃ) কে শ্যামপুর দরবার বা খানকার খলিফা নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.) ১২৮৯ সালে রাজশাহীর (মহাকাল গরে) বাঘা নামক স্থানে উপস্থিত হন এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।   

কাঞ্চনপুরে স্থায়ীভাবে খানকা স্থাপন করার পরে সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহ (রহ.) আপন মহিমায় এতদাঞ্চলে ইসলামের তনীয় বাণী প্রচারে ব্রতী হন। তাঁর উত্তম মাধুর্যপূর্ণ ব্যবহার ও অলৌকিক শক্তির প্রতি মুগ্ধ হয়ে এ অঞ্চলের বহু নর-নারী ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত হন।

হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহের (রহ.) নির্দেশে তারই বিশেষ খলিফা মহান সাধক হযরত শায়েখ বখতিয়ার মাইসুর (রহ.) বাংলার দক্ষিণ-পূর্ব দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপে ইসলাম প্রচারে গমন করেন। সন্দ্বীপের রোহনী নামক স্থানে উনার মাজার শরীফ রয়েছে। হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহ (রহ.) ও হযরত শাহ্‌ মখদুম (রহ.) এর নূরানি কাফেলার সাথে হযরত শায়েখ বখতিয়ার মাইসুর (রহ.) ও দিল্লি হতে বাংলার জনপদে আসেন।

হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহের (রহ.) নির্দেশে তার অপর বিশেষ খলিফা হযরত রাস্তি শাহ (রহ.) কুমিল্লা অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন। কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলে হযরত রাস্তি শাহ (রহ.) এর প্রচেষ্টায় অগণিত মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন।  কুমিল্লার মেহার কালীবাড়ি রেল স্টেশনের পূর্বদিকে শ্রীপুর গ্রামে উনার মাজার শরীফ অবস্থিত। তিনি হুজুর গাউসে পাক হযরত শায়েখ মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানীর (রহ.) বংশধর। হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহ (রহ.) ও হযরত শাহ্‌ মখদুম (রহ.) এর নূরানি কাফেলার সাথে হযরত রাস্তি শাহ(রহ.) ও বাগদাদ হতে বাংলার জনপদে আসেন। 

হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহ (রহ.) ও হযরত শাহ্‌ মখদুম (রহঃ) এর নূরানি কাফেলার সাথে হযরত শাহ মুহাম্মদ বোগদাদী (রহ.) ও বাগদাদ হতে নোয়াখালী অঞ্চলে আসেন। হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহের (রহ.) নির্দেশে হযরত শাহ মুহাম্মদ বোগদাদী (রহ.) কুমিল্লা অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে লিপ্ত হন।

কুমিল্লার শাহতলী রেল স্টেশনের নিকটবর্তী খন্দকার বাড়িতে উনার মাজার শরীফ অবস্থিত। তিনি হুজুর গাউসে পাক হযরত শায়েখ মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানীর (রহঃ) বংশধর। বাংলার সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ (১৩০১-১৩২২ খ্রিস্টাব্দ) শাহতলি মৌজা নিষ্কর সম্পত্তি হিসাবে দান করলে

 

তিনি সেখানে খানকাহ স্থাপন করেন। উনার প্রচেষ্টায় এই অঞ্চলে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটে।

হযরত সৈয়দ আহমদ তম্বরী ওরফে মীরান  শাহ(রহঃ) ও তার খলিফাগণ লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, সন্দ্বীপ ও নোয়াখালী অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করে ৭০৩ হিজরির ১৩০৩ সালে লক্ষীপুর জেলার কাঞ্চনপুর খানকাহ শরীফে ইন্তেকাল(ওফাত) করেন। হযরত শাহ মিরান (রাঃ) ও তদ্বীয় আপন বোন(ভগ্নি) হযরত সৈয়দা সালেহা মঞ্জুবা বিবির (রাঃ) মাজার শরীফ কাঞ্চনপুর দরগায় অবস্থিত। যা অত্র এলাকার দরগা বাড়ি নামে পরিচিত। দরগাহ বাড়ির বহিরাঙ্গঁনে উনার স্মৃতি বিজড়িত চিহ্ন সমূহ যথাঃকেরামতি পুকুর, বাঁশ ঝাড়, বিশাল আকারের বকুল ফুলের গাছ ও নয়নাভিরাম ডেকফল গাছ ইত্যাদি  যুগ যুগ ধরে অপরুপ সাজে আজও বিরাজ করছে।

এই মাজারে প্রতি বছর ১ (এক) দিন ব্যাপী উরস মাহফিল হয়ে থাকে এবং হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। এই মাজার দেখার জন্য অনেক লোক অনেক দূর থেকে আসে। এটি ১নং কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের একটি জনপ্রিয় মাজারশরিফ এই মাজার শরিফটির নামে যে কোন লোক যে কোন নিয়ত করে তা আল্লাহ পাক মঞ্জুর করেন।

Post a Comment

0 Comments