Header Ads Widget

হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.)

 


হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.) বাংলার বিখ্যাত আওলিয়া ও ধর্ম প্রচারক হযরত শাহ্ জালাল ইয়ামেনি (রহ.) এর সফরসঙ্গী এবং অন্যতম মুরিদ ছিলেন। তাঁর প্রকৃত নাম হল সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ।

তৎকালীন বাংলার রাজা ছিলো গৌর গোবিন্দ। তিনি ছিলেন তান্ত্রিক শক্তিতে বলিয়ান। রাজা গৌর গোবিন্দের "জীয়ন কূপ" নামে একটা আশ্চর্য জনক কূপ ছিল । সেই কূপে মৃত লাশ ফেলে দিলে তা সাথে জীবিত হয়ে যেত।

হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) ও ৩৬০ আওলিয়ার ইসলাম প্রচারের লক্ষে গৌর গোবিন্দের তুমল যুদ্ধ বাধে, এই যুদ্ধে গোবিন্দের যে সৈন্য মারা যেত তাকে রাজা জীয়ন কূপে ফেলে আবার জীবিত করে ফেলতেন। এ ভাবে গৌড় গোবিন্দের সাথে হাজার চেষ্টা করেও যখন বাবা শাহ্ জালাল যুদ্ধে জয় লাভ করতে পারছিলেন না। তখন তিনি ধ্যানে জানতে পারলেন যে ঐ জীয়ন কূপের শক্তি না নষ্ট করা পর্যন্ত এই যুদ্ধে জয় লাভ সম্ভব না।

তখন তিনি তাঁর ৩৬০ আউলিয়াদের ডেকে জীয়ন কূপ নষ্ট করার জন্য বললে কেউ রাজি হয় নি। কারন সেই কূপের পাহারায় থাকতো ৪০ জন উলঙ্গ নারী। ইসলামে অশ্লীলতার নিকট হওয়া হারাম।যখন হযরত  শাহ্ জালাল (রহ.) খুব চিন্তায় মগ্ন ছিলেন , হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ  (রহ.) আপন মোর্শেদ হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) এর চিন্তা মাখা মুখ সহ্য করতে না পেরে নিজেই জীয়ন কূপ নষ্ট করার কঠোর কাজে রাজি হলেন।

 উলঙ্গ নারীদেরকে নিজ চোখে না দেখতে হয় সেজন্য তিনি নিজের ধারালো তরবারি দিয়ে আল্লাহু আকবার বলে এক কোপে তাঁর নিজের কল্লা কেটে তিতাস নদীতে ফেলে দেন। এরপর কল্লা ছাড়াই নিজ তরবারি হাতে যখনই জীয়ন কূপের সামনে গেলেন তখন এই ভয়াবহ রূপ দেখে ৪০ জন উলঙ্গ নারী পালিয়ে যায়।

হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ  (রহ.) তখন এক টুকরা গরুর মাংস ঐ জীয়ন কূপে ফেলে দিলে সাথে সাথে ঐ কূপের সকল ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

এরপর কল্লা ছাড়াই হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ  (রহ.)  হযরত শাহ্ জালাল (রহ.)এর কদমের সামনে গিয়ে প্রান ত্যাগ করেন। সেদিন হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) বলেছিলেন "যদি কেউ আমার দরগাহ জিয়ারত করতে আসে, তাহলে সে যেন সবার আগে হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.)  এর মাজার জিয়ারত করে নেয়। তা না হলে তার জিয়ারতের অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। "এরপর হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.)  এর পাক দেহ নিজ হাতে সিলেটে দাফন করেন।

অপর দিকে হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.) এর কাটা মাথা তিতাস নদীতে ভাসতে ভাসতে খড়মপুর নামক স্থানে আসলে তা খড়ম পুরের জেলেদের জালে আটকা পড়ে, যখনই হিন্দু জেলেরা নদী থেকে জাল টান দেন, তখনই নদীতে ভূমিকম্প শুরু হয়। ফলে গৌরাঙ্গ দাস নামক এক হিন্দু জেলে এই ঘটনার রহস্য বাহির করতে নদীতে ডুব দিয়ে দেখেন যে জালের মধ্যে একটা কাটা মানুষের কল্লা আল্লাহ আল্লাহ জিকির করছে, এই কারামত দেখে সে অবাক হলে হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.)  তাকে নিজের মুরিদ করে নেন এবং খরমপুরে ইসলাম প্রচার করার নির্দেশ দেন। এরপর গৌরাঙ্গ দাস সেই জাল নদী থেকে তুললে হযরত সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ কল্লা শহীদ (রহ.)  তাদের আড়ালে সরে যেতে বলেন। এরপর সবাই আড়ালে চলে গেলে তিতাস নদীর পাড়েই আল্লাহর কুদরতে আপনা আপনি গায়েবি মাজার সৃষ্টি হয়।এই মাজারটি কল্লা শাহের মাজার নামে পরিচিত।

 


Post a Comment

0 Comments